উজ্জ্বল কুমার সরকার নওগাঁ প্রতিনিধিঃ
নওগাঁর মহাদেবপুরে মজুদ বিরোধী অভিযান পরিচালনায় দুটি রাইস মিলে জরিমানা ও দুজন ব্যক্তিকে জেল দেওয়ার ঘটনায় ধান কেনা বন্ধ করে অভিনব প্রতিবাদ জানিয়েছে মিল মালিকর ও ব্যবসায়রা।
উপজেলার বৃহৎ ধানের হাট ছাতুনতলীতে সোমবার সকাল থেকে ধান কেনা বন্ধ রাখেন মিল মালিকসহ ব্যবসায়ীরা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন এ হাটে ধান বিক্রি করতে আসা কয়েক’শ কৃষক।
এ সময় ধান বিক্রি করতে না পেরে যে গাড়িতে করে ধান নিয়ে এসেছিল সে গাড়ীতেই ধান ফিরিয়ে নিয়ে যেতে বাধ্য হন প্রায় ৫ শতাধিক কৃষক। এতে অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হয়েছে কৃষকদের।
এ হাটে ধান বিক্রি করতে আসা ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের কৃষক সাবের আলী, রনাইল গ্রামের মনসুর, মির্জাপুর গ্রামের ইদিকুল, সাবইল গ্রামের ইসমাইল হোসেন, সমাসপুর গ্রামের ফিরোজ হোসেন, দেবীপুর গ্রামের বেলাল হোসেন, দেওয়ানপুর গ্রামের আমির উদ্দীন, ফরমানপুর গ্রামের নেজামুদ্দিনসহ
পত্নীতলা উপজেলার শিবপুরহাটের রতন বর্মন ও সাধন বর্মন জানান, তারা খুব ভোরে ভটভটি, অটোচার্জারসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে বিক্রির জন্য ধান নিয়ে আসেন এ হাটে।
এ ধান বিক্রি করে প্রয়োজনীয় বাজার-সদাই করাসহ সার-সেচের খরচ মেটাবেন তারা। কিন্তু হঠাৎ করে মিল মালিকরা একজোট হয়ে ধান কেনা বন্ধ করায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা। দ্বিগুন ভাড়া দিয়ে আবার বাড়িতে ফিরিয়ে নিতে হচ্ছে তাদেও ধান। এতে আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন ওইসব কৃষকরা।
অন্যদিকে মিল মালিক আলমগীর হোসেন, মো. আয়নুল হক, ব্যবসায়ী এনামুল হক, মকবুল হোসেনসহ আরো অনেকে অভিযোগ করে বলেন, যেহেতু অতিরিক্ত ধান-চাল মজুদ রাখার অভিযোগে অভিযান চালিয়ে জেল ও জরিমানা গুনতে হচ্ছে তাদের সে কারণে ধান কেনা বন্ধ রেখেছেন তারা। তারা দাবী করেন,
দেশের সর্ববৃহৎ আমের এলাকা হওয়ায় আম পরিবহনের কারণে পরিবহন সংকটে সময়মত ধান-চাল সরবরাহ করতে না পারায় তাদের মজুদ কিছুটা বেড়েছে। এ মজুদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ধান কিনবেন না বলে সিদ্ধান্ত নেন মিল মালিক ও ব্যবসায়ীরা। পরে কৃষকদের চাপে প্রায় ৪ ঘন্টা পর কিছু কিছু ধান কিনতে শুরু করেন ব্যবসায়ী ও মিল মালিকরা।
উল্লেখ্য যে, মহাদেবপুর সহ সারাদেশে আকস্মিকভাবে চাউলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার গত রবিবার বিকেলে দুটি রাইস মিলে মজুদ বিরোধী অভিযান চালিয়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাসহ ওই ২ মিলের ম্যানেজারদের ৫ দিনের কারাদণ্ড প্রদান করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্টেট মো. আরিফুজ্জামান। এরই প্রতিবাদে মিল মালিকরা ধান না কেনার সিদ্ধান্ত নেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আরিফুজ্জামান বলেন, বিষয়টি নিয়ে মিল মালিক ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা হয়েছে।
নওগাঁ #