মোঃ জুবায়ের হোসাইন,
সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জ জেলায় বেলকুচি উপজেলায় চালা, তামাই,আগুরিয়া ,রান্ধুনিবাড়ি,মুকন্দগাঁতী,শেরনগর ,বেতিলসহ অধিকাংশ আবাসিক এলাকায় বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান স্থাপনে রয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতা যার কারনে দেধারছে গড়ে তুলছে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ চালিত পাওয়ারলুম কারখানা। আবাসিক এলাকা গুলোর জনজীবন স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে। পাওয়ারলুম কারখানা স্হাপনে নেই কোন নীতিমালা যত্রতত্র গড়ে তুলে শব্দ দূষণ, পানি দূষণ, বায়ু দূষণ করে হাজার হাজার অসচ্ছল পরিবারের লোকজনের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে অসাধু তাঁত মালিকেরা। এ সমস্ত তাঁত কারখানা স্হাপন করে ফসলি জমি বিনষ্ট করে সূতাঁ রংয়ের দূষিত কেমিক্যালযুক্ত পানি ফেলে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে ভূগর্ভস্থ পানি যার কারনে টিউবওয়েলের পানি সেবন বা ব্যবহার করা যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে স্হানীয় বাসিন্দারা জানান, আগে হাতে বুনানো তাঁতে শব্দ হত না তেমন বর্তমানে অপরিকল্পিতভাবে বিদ্যুৎ চালিত পাওয়ারলুম কারখানা স্হাপন করায় ব্যাপক শব্দ হচ্ছে ফ্যাক্টরিগুলোতে। এছাড়া বিদ্যুৎ চলে গেলে ফ্যাক্টরিতে চলে উচ্চ শব্দে জেনারেটর যা শব্দ দূষণে আরো ক্ষতিকর। কারখানা গুলোর চারদিকে বাউন্ডারি ওয়াল না থাকায় শব্দ ছড়িয়ে আশে পাশে বাসিন্দাদের জনজীবন ঝুকিপূর্ণ রয়েছে। এসমস্ত তাঁত মালিকদের উদাসিনতা এতটাই ভয়াবহতার রুপ নিচ্ছে যে একদিকে কর্মসংস্থান হয়েছে হাজার হাজার মানুষের অপরদিকে অপরিকল্পিত তাঁত কারখানার জন্য লাখ লাখ মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে এ অঞ্চলগুলো।
এ ব্যপারে এলাকার সচেতন মহলরা জানান,তাঁত কারখানার শব্দ দূষণ ও পোসেস মিলের পানি দূষণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো ক্ষতিপূরণের জন্য কার কাছে যাবে? তাদের অভিযোগ কে নেবে? অভিযোগ গ্রহন কারি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরাই তাঁত মালিকদের সাথে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মোটা টাকার বিনিময়ে নিরব ভুমিকায় থাকে। এর নেপথ্যে রয়েছে পাওয়ারলুম সমিতির সিন্ডিকেট , ডাইং কারখানা ভুক্ত সদস্যরা। যাদের কারণে এলাকার ভুক্তভোগীরা প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে বিভিন্ন ভাবে নাজেহাল ও ক্ষতিগ্রস্ত করে ফেলে যার কারনে প্রতিবাদ করার সাহস কেউ পায় না। এসব তাঁত মালিকদের মধ্যে রয়েছে কোম্পানিভুক্ত কিছু ব্যক্তিরা যাদের ব্যাংক ঋণ গ্রহনে রয়েছে সিক্তহস্ত। অনৈতিকভাবে কোটি কোটি টাকা ঋণ নিয়ে সিন্ডিকেটভুক্ত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে অবৈধভাবে ভারতের সূতা এবং রং সহ বিভিন্ন কাঁচামাল সংগ্রহ করে চালাচ্ছে ব্যবসা। যার কারনে ছোট ছোট তাঁত মালিকেরা বিপাকে পড়ে ও ক্ষতিগস্ত হয়ে ব্যবসা বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছে।
এই তাঁত শিল্পে অনৈতিকভাবে চলছে দুর দুরান্ত থেকে আসা শ্রমিকেরা যারা তাঁত কারখানাতে ম্যাচ করে বসবাস করছে তারা মাসের পর মাস। এ সমস্ত শ্রমিকদের সঠিক পরিচয়পত্র যাচাই এর জন্য প্রশাসনিকভাবে বা তাঁত মালিকদের মাধ্যমে কোন ব্যবস্থা না থাকায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের অপরাধীরা শ্রমিকবেশে এসে আত্মগোপনে থেকে নানা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়ে পালিয়ে যায়। এদের বিষয়ে অভিযোগ হলে তাঁত মালিকেরা কোন দায়ভার নেয় না, এমনকি ওই সমস্ত শ্রমিকদের অপরাধের প্রশ্রয় দিয়ে পরিচয়পত্র প্রকাশ করে না। যারদরুন এলাকায় বেড়ে গেছে চুরি, ছিন্তাই,ডাকাটি,ধর্ষণ ও পরকিয়ার প্রেমের ফাঁদে ফেলে মেয়েদের নিয়ে পালিয়ে যায়। ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন নিরুপায় হয়ে ক্ষতি মানতে বাধ্য হয়। প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করলেও তার কোন প্রতিকার পাওয়া যায় না। গভীর রাত্রি পর্যন্ত চলে এদের ফ্যক্টরির বাহিরে অনৈতিকভাবে চলাফেরা। জুয়া ও মাদক সেবনেও রয়েছে নানা অভিযোগ।
এ বিষয়ে উন্নয়ন অনুসন্ধান ফাউন্ডেশনের সমন্বয়কারী মোহাম্মাদ শাকিল আহমেদ ও সাংবাদিক মোহাম্মদ আলী বাবু জানান, তা়ঁত মালিকদের অপরিকল্পিতভাবে তাঁত কারখানা স্হাপন করায় শব্দ ও পানি দূষণ ,সূতা রংয়ের ডাইং কারখানার বর্জে এলাকায় ব্যপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জনজীবন। স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে অসংখ্য পরিবার। শিশু শিক্ষার্থীরা মানষিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পড়ালেখার ,স্মৃতিশক্তি লোভ পাচ্ছে তাদের ,মেজাজ খিটখিটে হচ্ছে ভবিষ্যতে চরমভাবে মানষিক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং এলাকায় জনজীবন স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। এ বেপারে স্হানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা সরজমিনে পরিদর্শন করে গণমাধ্যমে বহুবার প্রকাশিত করেছে বাস্তব চিত্র। এ পর্যন্ত অদৃশ্য কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন পদক্ষেপ দৃশ্যায়ন হয়নি। এলাকাবাসীর দাবি দূষণ মুক্ত পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য প্রত্যেকটা কারখানার অবস্থান পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ঘুমিয়ে থাকা দৃষ্টি সরকারের নজরদারিতে আনা প্রয়োজন।
এ বেপারে দেশের গণমাধ্যম ও পরিবেশ রক্ষার কাজে নিয়োজিত সংগঠন গুলোর পদক্ষেপই মুক্ত করতে পারে এ অঞ্চলের অনৈতিকভাবে স্থাপন করা তাঁত কারখানার দূষণমুক্ত পরিবেশ। এছাড়া স্থানীয় প্রশাসনের ও তাঁত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্বারা ভুক্তভোগীদের ভোগান্তি দুর করা সম্ভব না। বিষয়টি সময়ের দাবি সরকার দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে আবাসিক এলাকায় তাঁত শিল্প খ্যাত অনৈতিক বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে দাবি জানান।বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে প্রতিবেদক স্থানীয় প্রশাসন ও তাঁত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও দায়িত্বহীনতা এবং অবহেলার দৃশ্যপট বার বার পরিলক্ষিত করে তাদের মিথ্যাচার বক্তব্য গতানুগতিক ভাবে এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হলো না। কারন এ বেপারে বহুবার ভুক্তভোগীরা কোন সুবিচার পায়নি। টাকার বিনিময়ে কিছু অসাধু তাঁত মালিকেরা ব্যাংক ঋণ গ্রহন করে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ঋণ খেলাপির দায় দেখিয়ে কৌশলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে অনৈতিক ব্যবসা করে যাচ্ছে তার কোন প্রতিকার নেই। এই সমস্ত মালিকদের চিহ্নিত করে সরকারের রাজস্ব আদায়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনে প্রক্রিয়া করা প্রয়োজন।